গত বছর ৫টি ছোট যুদ্ধজাহাজ (প্যাট্রোল
ক্রাফট) তৈরি করে দেশের জাহাজ নির্মাণ
শিল্পে নতুন অধ্যায় শুরু করেছিল
খুলনা শিপইয়ার্ড। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই
এবার বড় আকারের অত্যাধুনিক
দুটি যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ
করতে যাচ্ছে সংস্থাটি।
নৌবাহিনীতে এগুলো লার্জ প্যাট্রোল
ক্রাফট বা এলপিসি নামে পরিচিত। দেশে বড়
যুদ্ধজাহাজ নির্মাণের উদ্যোগ এই প্রথম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
আগামী মাসে অথবা জানুয়ারিতে এই জাহাজ
নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
প্রতিটি জাহাজের নির্মাণ ব্যয়
ধরা হয়েছে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। একই
ধরনের দুটি এলপিসি চীন
থেকে তৈরি করতে খরচ হয় প্রায় এক হাজার
কোটি টাকা। আর্থিক দৃষ্টিকোণ
থেকে বাংলাদেশ শিপ বিল্ডিংয়ের
ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় প্রকল্প। এই
জাহাজ নির্মাণে গত ৩০ জুন নৌবাহিনীর
সঙ্গে চুক্তি করেছে খুলনা শিপইয়ার্ড।
খুলনা শিপইয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে,
প্রতিটি জাহাজের দৈর্ঘ্য ৬৪ দশমিক ২
মিটার এবং প্রস্থ ৯ মিটার। এর
গভীরতা হবে ৪ মিটার। সমুদ্রপথে ঘণ্টায় ২৫
নটিক্যাল মাইল বেগে চলবে এটি।
জাহাজে ৭০ জন একসঙ্গে থাকতে পারবেন।
শুরুর দুই বছরের মধ্যে যুদ্ধজাহাজের নির্মাণ
কাজ শেষ হবে। চীনের যুদ্ধজাহাজ
বিশেষজ্ঞরা এতে প্রযুক্তিগত
সহযোগিতা দিচ্ছেন।
কর্মকর্তারা জানান, বছরের
শুরুতে নৌবাহিনীর জন্য
দুটি এলপিসি কেনার বিষয়টি আলোচনা হলেও
শিপইয়ার্ডের পক্ষ থেকে খুলনায় জাহাজ
নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
আগে এগুলো চীন থেকে তৈরি করা হতো।
দেশের মাটিতে এত বড় উদ্যোগ নিয়ে সংশয়
প্রকাশ করেন অনেকে। পরে প্রধানমন্ত্রীসহ
নৌবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের
সুপারিশে এলপিসি নির্মাণের দায়িত্ব
খুলনা শিপইয়ার্ডকে দেওয়া হয়।
খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
কমডোর এস ইরশাদ আহমেদ সমকালকে বলেন,
দেশের মাটিতে তৈরি যুদ্ধজাহাজ বিদেশ
থেকে আমদানির চেয়ে অনেক
বেশি সক্ষমতাসম্পন্ন হবে। লার্জ প্যাট্রোল
ক্রাফট হলেও এগুলোতে করভেটের (আরও বড়
আকৃতির যুদ্ধজাহাজ) অধিকাংশ
সুবিধা থাকবে। স্বয়ংক্রিয় মিসাইলসহ
অত্যাধুনিক সব যুদ্ধাস্ত্র থাকবে।
তিনি বলেন, যুদ্ধ জাহাজের নকশা প্রণয়ন
কাজ প্রায় শেষের পথে। জাহাজের প্লেট,
ইঞ্জিনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম বিদেশ
থেকে আমদানি করা হবে।
চীনা বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় শিপইয়ার্ডের
২৫০ জন শ্রমিক ও প্রকৌশলী জাহাজ নির্মাণ
কাজে অংশ নেবেন।
Comments
Post a Comment