ডিএসএলআর ক্যামেরা কেনার কথা ভাবছেন?
চারদিকে যখন শুধু স্মার্টফোন আর
ডিএসএলআরের মেলা তখন আপনি বা আমিই
বাদ যাব কেন বলুন? এবছর চমৎকার কিছু
ক্যামেরা এসেছে, আবার পূর্বের বছরের
ক্যামেরাও তাদের রাজত্ব ধরে রেখেছে। সব
মিলিয়ে বছরের ডিএসএলআরের বাজার ছিল
গরম। কেমন ছিল বাজার? চলুন, ২০১৪ সালের
কিছু চমৎকার ডিএসএলআর
ক্যামেরা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১। Nikon D610
মূল ফিচার সমূহঃ
২৪.৩-মেগাপিক্সেল ফুল-ফ্রেম CMOS সেন্সর।
৩.২” এলসিডি ডিসপ্লে।
ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ (৩০ ফ্রেম পার
সেকেন্ড) ক্ষমতা।
সুবিধাঃ
দারুন ভাবে হ্যান্ডেল করা যায়।
চমৎকার সেন্সর।
ভালো এএফ পারফর্মেন্স।
অসুবিধাঃ
ন্যাটিভ ওয়াই-ফাই সুবিধা নেই।
এএফ পয়েন্ট গুলো খুবই কাছাকাছি ভাবে গ্রুপ
করা।
সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
নাইকন প্রতিষ্ঠানটি তাদের নিকন ডি৬০০
ডিএসএলআর ক্যামেরাটির মতই ডি৬১০
ক্যামেরাটিতেও রাখছে আকর্ষনীয় ডিজাইন
এবং ডি৬০০-তে যে সকল সমস্যা ছিল এই
ক্যামেরাটি প্রায় সে সব সমস্যা থেকেই
মুক্ত। নিকন ডি৬১০ ডিএসএলআর
ক্যামেরাটিতে রয়েছে ২৪.৩ মেগাপিক্সেল
CMOS সেন্সর এবং নিকনের ডিএক্স
সিরিজের লেন্স ব্যবহারের ন্যাটিভ সুবিধা।
এর ৩.২” এলসিডি ডিসপ্লেতে রয়েছে অটো-
অ্যাডজাসমেন্ট টেকনোলোজি যার
ফলে ডিভাইসটির ডিসপ্লে ইউনিট দিনের
সময় অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় ভাবে ব্রাইটনেস
কম-বেশি করতে সক্ষম। এছাড়াও, নিকন ডি৬১০
ক্যামেরাটির শাটার
সিস্টেমে কিছুটা ইম্প্রুভমেন্ট
এনেছে প্রতিষ্ঠানটি যার ফলে আগের
চাইতেও ভালো ডিটেইলড ডায়নামিক
রেঞ্জের
ছবি তোলা যাবে ডিভাইসটি দিয়ে।
মূল্যঃ £1,799 (কিছুটা কম
বা বেশি হতে পারে)।
২। Canon EOS 100D
মূল ফিচার সমূহঃ
১৮-মেগাপিক্সেলের APS-C CMOS সেন্সর।
১০৮০পিক্সেল এইচডি ভিডিও ধারণ ক্ষমতা।
আকারে ছোট এবং কমপ্যাক্ট ডিজাইন।
সুবিধাঃ
রাবারের হ্যান্ডগ্রিপ থাকার
কারণে আরামদায়ক গ্রিপ।
চমৎকার ডিজাইন।
ক্রিয়েটিভ ফিল্টার ফিচার লাইভ প্রিভিউ।
অসুবিধাঃ
প্রায় কাছাকাছি দামে ক্যাননের ইওএস
৭০০ডি ক্যামেরাটি বাজারে পাওয়া যায়।
AF সিস্টেমে শুধুমাত্র একটি ক্রস-টাইপ
পয়েন্ট।
আকারে ছোট হবার কারণে ব্যাটারিও ছোট
আকারের দেয়া হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
এই ডিএসএলআর ক্যামেরাটিই সম্ভবত
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ছোট
এবং হালকা ডিএসএলআর
ক্যামেরা এবং পারফর্মেন্স ও মূল্যের তুলনায়
আপনি একে ‘গ্রেট ভ্যালু ফর মানি’ও
বলতে পারেন। চমৎকার ১৮-মেগাপিক্সেল
এপিএস-সি সিএমওএস সেন্সর বিশিষ্ট
ক্যামেরাটির আইএসও রেঞ্জ ১০০-৬৪০০ হলেও
তা ২৫,০০০ পর্যন্ত এক্সপেন্ড করা যায়।
এছাড়াও আপনি এই ডিভাইসটির মাধ্যমে ২৪
বা ৩০ ফ্রেম-পার-সেকেন্ডে ফুল
এইচডি ভিডিও ধারণ করতে পারবেন।
ডিভাইসটিতে রয়েছে ১০৪০-ডট বিশিষ্ট ৩”
টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে এবং চমৎকার সব
ক্রিয়েটিভ ফিল্টার যার
মাধ্যমে অ্যামাচাররাও খুব সহজেই চমৎকার
টোনের ছবি তুলতে সক্ষম হবেন।
মূল্যঃ £650 (কিছুটা কম
বা বেশি হতে পারে)।
৩। নিকন ডি৭১০০
মূল ফিচার সমূহ
২৪.৬১-মেগাপিক্সেল সেন্সর।
ফুল-এইচডি ভিডিও ধারণ ক্ষমতা (৩০ ফ্রেম-
পার-সেকেন্ড)।
চমৎকার ডিসপ্লে।
সুবিধাঃ
চমৎকার এলসিডি স্ক্রিন।
অ্যাকুরেট এবং বিশ্বাসযোগ্য হোয়াইট
ব্যালান্স।
দারুন ভাবে হ্যান্ডেল করা যায়।
অসুবিধাঃ
স্লো প্রসেসিং টাইম।
বার্স্ট মোড বেশ একটা সুবিধার নয়।
সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
নিকন ডি৭১০০ ডিএসএলআর ক্যামেরাটি মূলত
পূর্বের চমৎকার একটি মিড-রেঞ্জ ডিএসএলআর
নিকন ডি৭০০০ এর আপডেট বা উন্নত সংস্করণ।
নিকন ডি৭১০০ ডিভাইসটিতে যুক্ত
করা হয়েছে নতুন একটি শক্তিশালী সেন্সর,
ইম্প্রুভড ভিডিও ফিচারস ইত্যাদি চমৎকার সব
সুবিধা। ডি৭০০০-এর ১৬ মেগাপিক্সেল
থেকে এক লাফে ২৪
মেগাপিক্সেলে চলে যাওয়া ডি৭১০০
ডিএসএলআর ক্যামেরাটিতে রয়েছে ৫১-
টি অটোফোকাস পয়েন্ট এবং ২৫,৬০০ পর্যন্ত
এক্সপেন্ডেবল আইএসও সুবিধা। এতে ব্যবহার
করা হয়েছে EXPEED 3 ইমেজ
প্রোসেসিং ইউনিট যা আরও দ্রুত
গতিতে ইমেজ প্রসেসিং করতে সক্ষম।
রয়েছে ১২২৪-ডট রেজ্যুলেশন সম্পন্ন ওয়াইড-
অ্যাঙ্গেলের ৩.২”
এলসিডি ডিসপ্লে যা আপনাকে চমৎকার
শার্প এবং ক্লিয়ার ভ্যিউ প্রদান
করতে সক্ষম।
মূল্যঃ £1,047 (কিছুটা কম
বা বেশি হতে পারে)।
৪। Pentax K-5 II
মূল ফিচার সমূহঃ
১৬.৩-মেগাপিক্সেল বিশিষ্ট APS-C সেন্সর।
ওয়েদার-সিলড বডি।
ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ ক্ষমতা।
সুবিধাঃ
লো-লাইটেও চমৎকার অটো ফোকাস সুবিধা।
ওয়েদার-সিলড বডি – যার ফলে আপনি রুক্ষ
আবহাওয়াতেও
ক্যামেরাটি নিশ্চিন্তে ব্যবহার
করতে পারবেন।
চমৎকার কাস্টোমাইজেশন সুবিধা।
বেশ ভালো বিল্ড কোয়ালিটি।
অসুবিধাঃ
১৮-৫৫মিমি কিট
লেন্সটি দিয়ে ছবি তুললে ছবিতে কিছুটা নয়ে
আসে।
বাজে কোয়ালিটির ফ্ল্যাশ।
ফোকাস পয়েন্টের
ডায়ালটি বাজে ভাবে ডিজাইন
করা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
Pentax K5 II ডিভাইসটি অন্যান্য ফ্ল্যাগশীপ
ডিএসএলআরের সাথে তুলনায়
হয়তো কিছুটা পিছিয়ে পরবে তবে এর
পারফর্মেন্স কিন্তু খারাপ নয়। পূর্বের K-5
ক্যামেরাটির মতই এই ক্যামেরাটিতেও
ব্যবহার করা হয়েছে ১৬.৩ মেগাপিক্সেলের
APS-C সেন্সর। ক্যামেরাটির আইএসও রেঞ্জ
১০০-১২,৮০০ হলেও এটি সর্বনিম্ন ৮০
এবং সর্বোচ্চ ৫১,২০০ পর্যন্ত কাজ করতে পারে।
ক্যামেরাটিতে ব্যবহার করা হয়েছে নতুন
SAFOX X অটোফোকাস সিস্টেম যা চমৎকার
অ্যাকুরেট ফোকাস করে থাকে,
এমনকি অতিরিক্ত ব্রাইট এবং লো-লাইট
কন্ডিশনেও। ক্যামেরাটিতে রয়েছে একটি ৩”
বিশিষ্ট এলসিডি স্ক্রিন, বিল্ট ইন টাইমার
এবং raw ইমেজ প্রোসেসর। এখনও কিছুটা বাগ
থাকলেও একটি মাইনর আপডেটই ঠিক
করতে পারে সকল সমস্যার সমাধান
এবং ডিভাইসটিকে রুপান্তরিত
করতে পারে আরও ভালো একটি ডিএসএলআর
ক্যামেরাতে।
মূল্যঃ £870 (কিছুটা কম
বা বেশি হতে পারে)।
৫। Canon EOS 6D
মূল ফিচার সমূহঃ
২০.২ –মেগাপিক্সেল বিশিষ্ট CMOS ফুল-
ফ্রেম সেন্সর।
ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ ক্ষমতা।
বিল্ট-ইন ওয়াই-ফাই এবং জিপিএস সুবিধা।
সুবিধাঃ
চমৎকার ইমেজ কোয়ালিটি।
ইম্প্রেসিভ লো-লাইট পারফর্মেন্স।
ওয়াই-ফাই এবং জিপিএস সাপোর্ট।
সলিড এবং রোবাস্ট বিল্ড কোয়ালিটি।
আক্যুরেট মিটারিং সিস্টেম।
অসুবিধাঃ
শুধুমাত্র একটি ক্রস-টাইপ এএফ সেন্সর।
কোন বিল্ট-ইন পপ আপ ফ্ল্যাশ নেই।
জিপিএস এবং ওয়াই-ফাই এর
কারণে ব্যাটারি খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়।
এইচডি ভিডিও ধারণের জন্য কোন ম্যানুয়াল
অডিও কন্ট্রোল নেই।
সংক্ষিপ্ত রিভিউঃ
ক্যাননের ইওএস ৬ডি ক্যামেরাটিই
হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সর্বনিম্ন দামের ফিল-
ফ্রেম ডিএসএলআর ক্যামেরা।
ক্যামেরাটি অসাধারণ ইমেজ
কোয়ালিটি প্রদান করে থাকে এবং এর বিল্ড
কোয়ালিটিও চমৎকার। সেমি-প্রোফেশনাল
এই ক্যামেরাটিতে রয়েছে ২০.২ –
মেগাপিক্সেল বিশিষ্ট CMOS ফুল-ফ্রেম
সেন্সর, ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ
ক্ষমতা এবং বিল্ট-ইন ওয়াই-ফাই
এবং জিপিএস সুবিধা। এর আইএসও রেঞ্জ
১০০-২৫,৬০০ এবং ক্যানন ৫ডি মার্ক ৩ এর মতই
এই ডিভাইসটিতেও ব্যবহার করা হয়েছে DIGIC
5 ইমেজ প্রসেসর। ব্যবহার
করা হয়েছে ক্যাননের নিজস্ব 63-Zone ডুয়াল
লেয়ার মিটারিং সিস্টেম যা উজ্জ্বল
বা লো-লাইটেও অ্যাকুরেট
মিটারিং করে থাকে।
মূল্যঃ £1,689 (কিছুটা কম
বা বেশি হতে পারে)।
Comments
Post a Comment