মানুষের একটি জন্মগত অভ্যাস হল,যা কিছু
অন্যরকম,রহস্যময়,তাই সে জানতে চায়।কিন্তু
কিছু ঘটনা সবসময় শুধু রহস্যই রয়ে যায়।সেই
রহস্যের কুয়াশা ভেদ করা যায় না।এমনই এক
রহস্য হল,টাইটানিক জাহাজ।
এযাবত কালের সবচাইতে বড় জাহাজ হল
টাইটানিক।এই
জাহাজকে নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন,অনেক
কৌতূহল।গবেষকগন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেও
এই উত্তরই আবার নতুন নতুন প্রশ্নের জন্ম
দিয়েছে।
জাহাজটির নির্মানকাজ শুরু হয়
১৯০৭সালে এবং শেষ হয় ১৯১২ সালে।তারপর
১৯১২ সালের ১২ইএপ্রিল ২,২২৪ জন
যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে।
মজার বিষয় হল,একজন মানুষের জন্য যত ধরণের
বিলাসবহুল সরঞ্জামাদি প্রয়োজন তার সবই
ছিলো এই জাহাজটিতে।
লাইব্রেরী,ব্যায়ামাগার,
এমনকি সুইমিংপুলও!!!তাইতো পৃথিবীর সব
ধনী ব্যক্তিরা এতে ভ্রমনের জন্য অনেক
টাকা দামে টিকিট কিনেছিলেন।কিন্তু
বিধি বাম!!
জাহাজটি নির্মানের পর গবেষকগণ
বলেছিলেন টাইটানিক কখনোই
পানিতে ডুববে না।কিন্তু একটা বরফখন্ডের
আঘাতেই এত বড় জাহাজটি ডুবে যায়।
আশ্চর্যজনক কথা হল যেখানে এত বিলাসবহুল
জিনিস ছিলো,সেখানে ছিলো না পর্যাপ্ত
লাইফবোট।লাইফবোট ছিলো মোট
যাত্রী সংখ্যার মাত্র এক তৃতীয়াংশ।
১২ই এপ্রিল যাত্রা করার পর ১৪ই এপ্রিল সকাল
১১.৪০ মিনিটে উত্তর আটলান্টিক
মহাসাগরে দুর্ঘটনাটি ঘটে।আর স্তব্ধ
হয়ে যায় পুরো বিশ্ব। জানা যায়,জাহাজ
নিয়ন্ত্রনকারীরা যখন বরফখন্ডের অবস্থান
জানতে পারে তখন এটি তার সর্ব্বোচ্চ
গতিতে চলছিলো।তাই কিছু বুঝে ওঠার আগেই
জাহাজটির সাথে ধাক্কা লেগে যায়
এবং ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকে।
ঘটনার প্রায় ১০০বছর পর
জাহাজটি সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য
পাওয়া যাচ্ছে।জানা যায়,যাত্রা শুরুর
আগে নাকি জাহাজের সাধারণ
যাত্রীদেরকে ধনী ও বিখ্যাত যাত্রীদের
নামের তালিকা দেখান হয়েছিলো।
যা ছিলো বিবাহযোগ্য মেয়ের মায়েদের
আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু।
দুর্ঘটনার প্রায় ৭৫ বছর পর ১৯৮৫
সালে গবেষকগ্ণ সমুদ্রের তলদেশ
হতে খুঁজে পান এই রাজকীয় জাহাজের
ধ্বংসাবশেষ।
ঘটনার পর অনেকে একে ঈশ্বরের অভিশাপ ও
বিজ্ঞানের অহমিকার ফল বলে আখ্যায়িত
করেন।
ইংরেজ কবি শেলী তার ওজিম্যান্ডিয়াস
কবিতায় বলেন,"সমুদ্রের নীচে মাটি,পলি আর
প্রবালের মৃতদেহের পাশে পড়ে আছে বিংশ
শতাব্দীর বিজ্ঞানের অহমিকার চিহ্ন।"
টাইটানিক আশির্বাদ না অভিশাপ সেই
প্রশ্ন তুলবো না।তবে,এই
কথাটা অনায়াসে বলা যায়, টাইটানিক এমন
এক কিংবদন্তি যা শত বছর পরেও নিজের
রহস্যকে ধরে রেখেছে।হয়ত বা রহস্যই
হয়ে থাকবে যুগের পর যুগ।
Comments
Post a Comment