আমাজন জঙ্গল ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তাই
মানুষকে সেদিকে দৃষ্ট আকর্ষণ করানোর জন্য
একটা অভিনব কিছু করার কথা ভেবেছিলেন
পল রসোলি। আর সেটা যে ভয়ঙ্কর কিছু, তার
ইঙ্গিত আগেই পাওয়া গিয়েছিল।
ডিসকভারি চ্যানেলের
ওয়েবসাইটে জানিয়েছিলেন অ্যানাকোন্ডার
পেটে জীবন্ত ঢুকে যাবেন তিনি। সেই
শো নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছিল তখন
থেকেই। বিষয়টা ভুয়ো বা নকল সাপ
দিয়ে করানো হবে বলেও মনে করেছিলেন
কেউ কেউ। কিন্তু শেষমেশ তিনি যা করলেন,
তা শুনলে চোখ কপালে ওঠার মতই
অবস্থা হবে। আস্ত একটা অ্যানাকোন্ডার
পেটে এক ঘণ্টা কাটিয়ে এলেন পল। সেই
ভয়াবহ মুহূর্ত হল ক্যামেরাবন্দী।
আকারে বিশ্বের সবথেকে বড় এই সাপ শিকার
পেলে তাকে সবার আগে শ্বাসরোধ করে। আর
সেটাই পল রসোলির জন্য
সবথেকে বেশি আতঙ্কের বিষয় ছিল। শ্বাস
যাতে বন্ধ না হয় তার জন্য তিনি বিশেষ
ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। বিশেষ ফাইবার স্যুট
দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তাতেই ছিল শ্বাস
নেওয়ার ব্যবস্থা। সেখানেই লাগানো ছিল
ক্যামেরা। গত দু’মাস ধরে আমাজনের
জঙ্গলে অ্যানাকোন্ডা খুঁজেছেন রসোলি।
প্রত্যেক রাতে চলত তাঁর অনুসন্ধান।
অবশেষে দেখা মিলল ২০ ফুট লম্বা ওই
অ্যানাকোন্ডার।
রসোলি জানিয়েছেন, তিনি যখন ওই সাপের
কাছে যান তখন তাঁকে খাওয়ার
চেষ্টা করেনি এটি। কিন্তু তিনি নিজেই
প্ররোচনা দেন। নৈশভোজে নিজেকেই উপহার
দেন তিনি। এরপর প্রথমে মাথা ও
পরে গোটা শরীরটাকে নিজের পেটের
মধ্যে ঢুকিয়ে নেয় সাপটি। এরপর একঘণ্টার
রোমহর্ষক কাহিনী। প্রতি মুহূর্তে নিজের
টিমের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ
রেখেছিলেন রসোলি। ভয় একটি ছিল, কিন্তু
এই কাজে যথেষ্ট উৎসাহী ছিলেন তিনি।
ফিরে এসে রসোলি জানিয়েছেন,
‘বিশ্বে যা জাগে কেউ করেনি, তা করার
মজাই আলাদা’।
বিশেষ কায়দায় বেরিয়ে এসেছেন তিনি।
তিনি জানান, যদি অ্যানাকোন্ডার
সামনে কোনও অন্য
শিকারি চলে আসে তাহলে এটি এদের খাবার
ফেলে দিয়ে পালায়। সেই পদ্ধতিতেই
বেরিয়ে এসেছেন রসোলি। এখনও ভারত, চিন,
অস্ট্রেলিয়ায় প্রচারিত হয়নি এই শো।
ডিসকভারি কর্তৃপক্ষ আশা করছে বিশ্ব
জুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ দেখবে এই শো।
বিগত এক দশক ধরে বন্যপ্রাণীদের নিয়ে কাজ
করেছেন রসোলি। তাঁর
মতে পৃথিবী থেকে অরণ্য ক্রমশ বিলুপ্তির
পথে। সেদিকে খেয়াল নেই কারও মানুষের
আরও বেশি করে এই সমস্যার
কথা বোঝা উচিৎ। সেইজন্যই মৃত্যুর
ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করেছেন তিনি।
Comments
Post a Comment