মশা ! ছোট্ট একটি পতঙ্গ অথচ
মানুষকে যে পরিমাণ বিরক্তি আর
ভোগান্তিতে ফেলে তা বোধহয় অন্য কোন
প্রাণী ফেলে না। গরমের সময় এই ছোট্ট
প্রাণীটিকে প্রতিরোধ করার
জন্যে বাড়িতে বাড়িতে রীতিমত কামান
দাগানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সন্ধ্যার
আগে আগেই ঘরের দরজা জানালা বন্ধ
করে দেয়া হয় যাতে মশা আসতে না পারে।
রাতে ঘুমানোর সময় মশারি টাঙ্গানো হয়
যাতে মশা তার বিরক্তিকর গান
শুনাতে না পারে। মশার কয়েল, স্প্রে,
গায়ে মাখার ক্রিমসহ আরো কত কি ! আজ
আমরা জানব এই মশা নিয়ে মজার কিছু তথ্য।
তো চলুন জেনে আসি।
১.মশার প্রায় ৩,৫০০ প্রজাতি আছে। এর
মধ্যে অল্প কিছু প্রজাতিই কেবল মানুষসহ
অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীকে কামড়ায়।
বাকিরা নির্ভর করে ফুলের মধুর উপর !
শুনতে অদ্ভুত লাগলেও তা সত্যি ! মশাও ফুল
থেকে মধু সংগ্রহ করে !
২.মশার গান শুনেন নি এমন মানুষ
পাওয়া যাবেনা। মশা কানের
কাছে আসলে আমরা যে শব্দ শুনি তা মূলত
মশার ডানা ঝাপটানোর শব্দ।
একটি মশা সেকেন্ডে প্রায় ৩০০-৬০০ বার
ডানা ঝাপটাতে পারে। আর অতি অল্প
সময়ে এতবার ডানা ঝাপটানোর দরুনই
আমরা গুনগুন শব্দ শুনতে পাই।
৩.কোন মশা যদি আপনাকে কামড়িয়ে থাকে তাহলে থাকতে পারে যে সেটা স্ত্রী মশা !
কেবলমাত্র স্ত্রী মশাই মানুষকে কামড়ায়।
মানুষের রক্ত ভালো প্রোটিনের উৎস, আর
স্ত্রী মশার সেটা দরকার পরে তার ডিমের
জন্যে। আর পুরুষ মশারা আপনার
চারপাশে থেকে আপনাকে ব্যতিব্যস্ত
রাখবে যাতে স্ত্রী মশাটি নির্বিঘ্নে রক্ত
শুষে নিতে পারে ! এরপর থেকে মশার লিঙ্গ
সম্পর্কে মতামত করে অন্যকে চমকিয়ে দিতে পারবেন !
৪.একটি মশা ঘণ্টায় প্রায় ১-১.৫ মাইল
বেগে উড়ে যেতে সক্ষম ! শুনে চমকাবার কিছু
নেই, অন্যান্য কীটপতঙ্গের গতির চেয়ে এই
গতি আহামরি তেমন কিছুনা, তুলনামূলক অনেক
কমই বলা যেতে পারে।
৫.আপনার মতে পৃথিবীর সবচেয়ে মারাত্মক
প্রাণী কোনটি? উত্তর
যদি হয়ে থাকে মশা ছাড়া অন্য কিছু
তাহলে নিঃসন্দেহে ধরে নিতে পারেন
যে আপনার ধারণা ভুল ! পৃথিবীর
সবচাইতে মারাত্মক প্রাণী মশা ! প্রতিবছর
মশার কারণে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুসহ
নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ২
মিলিয়নেরও বেশি মানুষ মারা যায় !
৬.মশা অতি অল্প সময়েই কামড়ানোর
উপযোগী হয়ে উঠে ! ডিম থেকে বের হওয়ার
প্রায় এক সপ্তাহের মধ্যেই এটি পূর্ণবয়স্ক
মশার মত আচরণ করতে শুরু করে।
৭.অনেক সময় খেয়াল করবেন আপনার সাথেই
থাকা অনেকজনের মধ্যে কোন
একজনকে মশা তুলনামূলক একটু বেশিই
কামড়াচ্ছে !
এর কারণ তার মধ্যে এমন কিছু
আছে যা মশাদেরকে তাকে খুঁজে বের
করতে সহায়তা করে। মশা গায়ের গন্ধ,
নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ত্যাগ করা কার্বন-ডাই
অক্সাইড থেকে কামড়ানোর
জন্যে উপযোগী মানুষ বা অন্যান্য
প্রাণীকে শনাক্ত করে। অনেক সময়
চেহারা দেখার মাধ্যমেও শনাক্ত
করতে পারে। যদিও তাদের দর্শন শক্তি তেমন
একটা উন্নত না। নিয়মিত গোসল না করলে,
অতিরিক্ত ঘামলে, শরীরের উত্তাপ
বেশি হলে মশা কাউকে সহজেই ভিক্টিম
হিসেবে চিহ্নিত করে নিতে পারবে।-
তথ্যসূত্রঃ পিপীলিকা ব্লগ।
Comments
Post a Comment