দাম্পত্য সম্পর্ক অটুট রাখার ৬টি কৌশল

"বিয়ে, ভালোবাসা, সংসার, ভাংগন। ফলাফল
হল ভগ্ন পরিবার।" এই ধারাবাহিক দৃশ্যের
শুরুটা মধুর হলেও শেষটা কিন্তু মধুর নয়।
একটি ভগ্ন পরিবার কারোই কাম্য নয়। কিন্তু এই
দৃশ্যই আমরা আজকাল অহরহ দেখতে পাই। ভগ্ন
পরিবারের অধিকাংশ দম্পতিই বলে থাকেন,
"আমি অনেক চেষ্টা করেছি। আমার কিছু করার
ছিলো না।" আসলেই কি করার কিছু থাকে না?
থাকে। কেননা প্রতিটি সমস্যার একটি খুব সহজ
সমাধান থাকে। খুব বেশি সহজ বলেই
আমরা সেগুলোর দিকে নজর দিই না।
পারিবারিক সম্পর্কে অটুট রাখারও কিছু উপায়
রয়েছে, রয়েছে ভগ্ন পরিবার রোধের সমাধান।
মনোবিজ্ঞানীরা তাই সম্পর্ক অটুট রাখার কিছু
উপায় তুলে ধরেছেন.......
১.প্রতিটি দাম্পত্য সম্পর্কের
ক্ষেত্রে সবচাইতে গুরুত্বপুর্ন হল
সত্যবাদিতা,বিশ্বাসযোগ্যতা। সম্পর্কের
ক্ষেত্রে মানুষ সাধারনত
মিথ্যা বলে থাকে,দুটি কারনে। প্রথমত,রূঢ়
সত্যটি জানিয়ে প্রিয় মানুষটিকে কষ্ট
দিতে চায় না। দ্বিতীয়ত,মানুষ ভাবে সত্য হয়ত
সম্পর্কের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু
মিথ্যাটি প্রকাশ পাওয়ার পর
গোছালো সংসারও কিন্তু ভেংগে যায়। শুরু
থেকেই সততা বজায় রাখুন।
এতে ধীরে ধীরে সুষম সম্পর্ক গড়ে উঠবে।
২.দাম্পত্য সম্পর্কে কখনোই বিচারকের ভূমিকায়
অবতীর্ন হবেন না। একে অপরের মতামত শুনুন।
নিজের মতামত জানান। বিচারকের ভূমিকায়
অবতীর্ন হলে বাতাস উল্টো দিকে বইবে। যত বড়
সমস্যাই হোক না কেন,এই ভাবেই সমাধান বের
হয়ে আসবে। এটা স্বামী কিংবা স্ত্রী উভয়ের
ক্ষেত্রে প্রযোয্য।
৩.পারিবারিক সম্পর্ক গড়ে ওঠার পর স্বভাবতই
আমরা "আমি" থেকে " "আমরা"হয়ে যাই। কিন্তু
সবসময়ই পছন্দ অপছন্দগুলো মিলবে তেমনটা নয়।
এক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার
মানসিকতা থাকা ভাল,কিন্তু
তা যদি বাড়াবাড়ি রকমের হয়
তবে তা সম্পর্কের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
কেননা নিজের অপূর্নতাগুলো একসম্য় ক্ষোভ
হয়ে দাঁড়াবে। তাই আলাদাভাবে হলেও নিজের
সখ,পছন্দগুলো পূরন করুন। এতে সম্পর্ক অটুট থাকবে।
৪.দুইটি পরিবার থেকে আসা দুজন মানুষের সব
বিষয়ই
খাপে খাপে মিলে যাবে,তেমনটা আশা করা ঠি
না। ধাতস্ত হবার চেষ্টা করুন। একেবারেই
না পারলে সরাসরি আলোচনা করুন।
নতুবা আপনার বিরক্তির কারন
সে জানবে না,বরং ঘটবে নানা অপ্রীতিকর
ঘটনা।
৫.কাছের দূরের যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই
মানুষ তার আবেগ অনূভূতির মুল্যায়ন চায়। তাই
ভালোবাসার মানুষটি আপনার জন্যে কিছু
করলে তার প্রশংসা করুন। তাকে বুঝতে দিন শুধু
তার কাজ নয়,তিনিও আপনার কাছে অনেক
গুরুত্তপূর্ণ। হতে পারে তা খুব ছোট একটি কাজ।
আপনি ভাবতেও পারবেন না,এই একটি বিষয়
তাকে কত আন্দলিত করবে।
৬.সবচাইতে বড় যে সমস্যাটি দেখা যায়,তা হল,
ভালোবাসার অভ্যেস। বিয়ের
আগে যে বিষয়গুলো পুলকিত করে,সেই
বিষয়গুলো একসময় অভ্যেস বলে মনে হয়। ফলে,হৃদয়
জানান দেয়, সেই ভালোবাসা বুঝি আর নেই।
পুরনো মুহুর্তগুলো নতুনভাবে নিয়ে আসুন। নিজের
পুরনো ভালোবাসাকে নতুনভাবে তুলে ধরুন।
তাকে বুঝতে দিন,শুধু সময় আর প্রেক্ষাপট
পাল্টেছে,ভালোবাসা আছে সেই আগের মতই।
মনোবিজ্ঞানীদের এই সমাধান গুলোর সাথে হয়ত
অনেকেই একমত হবেন না। অনেকেই
বলবেন,নানান বাহ্যিক অনুসংগের কথা। তাদের
অবগতির জন্যে বলছি,বাহ্যিক বিষয়গুলোর
চাইতে এই মনস্তাত্তিক বিষয়গুলোই অধিক
গুরুত্তপূর্ণ। কারন,আমরা আসলে সবকিছু
তেমনভাবেই দেখি যেভাবে আমরা দেখতে চাই।
-সুত্র: ইওরটাংগো ।

Comments