সামনেই ছিলেন চিকিত্সক-নার্সরা । অথচ
তাঁদের অজান্তেই অস্ত্রোপচারের
আগে সন্তান প্রসব করলেন মহিলা ।
আম্বিলিকাল কর্ড বা নাভিরজ্জু না কাটায়
সেই শিশু মাটিতে পড়ে গেল ।
নার্সরা কোনও কিছু
না জেনে মহিলাকে অন্তঃসত্ত্বা ভেবে তাঁক
জন্য নিয়ে চলতে শুরু করলেন ।
ফলে মাটিতে পড়া অবস্থায় মায়ের
সঙ্গে ঘষটে ঘষটে চলল সদ্যোজাত ।
এতে কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ল
সদ্য মাতৃজঠর থেকে বের হওয়া শিশুটি ।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে চীনের
একটি হাসপাতালে ।
সংবাদসংস্থার খবর, অস্ত্রোপচারের জন্য
হুইল-চেয়ারে করে প্রসূতি-কক্ষ
নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অন্তঃসত্ত্বাকে । পথেই
সন্তান প্রসব করেন তিনি । কিন্তু,
সঙ্গে থাকা চিকিত্সক-নার্সরা তা খেয়ালই
করেননি । ফলে, সদ্যোজাত শিশুটি মায়ের
জঠর থেকে বেরিয়ে পড়ে যায় মাটিতে ।
মাথা থেতলে যায় । তখনও তার দেহের
সঙ্গে লেগেছিল নাভিরজ্জু । সেই অবস্থায়
প্রায় ১০ মিটার
মাটিতে ঘষটে ঘষটে এগোতে থাকে সদ্যোজা
নজর যখন আসে ততক্ষণে অনেক
দেরি হয়ে গিয়েছে । সদ্যোজাত শিশুর
মাথার বাঁদিক পুরোপুরি থেঁতলে যায় ।
শিশুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন
চিকিত্সকরা ।
ঘটনাটি গত ২ জানুয়ারি ঘটেছে চিনের
লুয়োইয়াং শহরের চিলড্রেন মেডিক্যাল
কেয়ার সেন্টারে । চিকিত্সকদের মতে,
পড়ে যাওয়ার ফলে ইন্ট্রাক্র্যানিয়াল
হেমাটোমায় মৃত্যু হয় শিশুটির । শিশুটির
বাবা জানিয়েছেন, প্রসব-যন্ত্রণা ওঠায় ওই
হাসপাতালের এক চিকিত্সক স্বাভাবিক
প্রক্রিয়ায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন ।
কিন্তু, অপর চিকিত্সক কিন হোনজুয়ান
সিজারিয়ান পদ্ধতিতে অস্ত্রোপচারে জন্য
জোর দেন । কিনের যুক্তি ছিল, ১৫ বছর
আগে প্রথম সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময়
সিজারিয়ান পদ্ধতির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব
করেছিলন অন্তঃসত্ত্বা । সেই প্রস্তাব
অনুযায়ী, অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে হুইল-
চেয়ারে বসিয়ে লেবর-রুমের
উদ্দেশে নিয়ে যাওয়ার সময়ই এই ঘটনা ঘটে ।
পুরো ঘটনাটি চিকিত্সক-নার্সদের চোখ
এড়িয়ে গেলেও হাসপাতালের
সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে । এরপরই
নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
চিকিত্সায় গাফিলতি হয়েছে স্বীকার
করে নিয়েছে তারা । শিশুমৃত্যুর ঘটনার
জেরে কিন হোনজুয়ানকে বরখাস্ত করার
পাশাপাশি একাধিক
চিকিত্সককে প্রশাসনিক পদ
থেকে সরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
সদ্যোজাত ভূমিষ্ঠ হল অথচ চিকিত্সক-
নার্সরা কেন টের পেলেন
না বা প্রসূতিকে হুইল-চেয়ারে কেন
নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, এইসব প্রশ্নের কোনও
সদুত্তর দিতে না পারার জন্য ওই ঘটনার
সঙ্গে জড়িত নার্সদেরও
শাস্তি দেওয়া হয়েছে । তদন্ত শুরু
করেছে শহরের স্বাস্থ্য দফতরও ।
Comments
Post a Comment