ক্যান্সার প্রতিরোধের ৬ টি কার্যকরী উপায়

ক্যান্সার, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহতম
ব্যাধিগুলোর একটি। কিন্তু কেন এই
ব্যাধি বাসা বাঁধে মানবদেহে? এমন প্রস্নের
উত্তর আসলে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের কাছেও
এখনও অনেকটাই ধোঁয়াশা। আর এর চিকিৎসাও
তাই অনেক ক্ষেত্রেই অকার্যকর।
তবে বিজ্ঞানীরা বর্তমানে দিনরাত
গবেষণা করে চলেছেন ক্যান্সারের সামগ্রিক
প্রতিকার ও প্রতিরোধ আবিস্কারে।
এক্ষেত্রে তারা অনেক সফলতাও অর্জন
করছেন বটে। ক্যান্সার বা কর্কটরোগ মূলত
অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত
রোগসমূহের সমষ্টি। এখনও এই রোগে মৃত্যুর হার
অনেক বেশি। কারণ হচ্ছে প্রাথমিক অবস্থায়
ক্যান্সার রোগ সহজে ধরা পরে না, ফলে শেষ
পর্যায়ে গিয়ে ভালো কোনও
চিকিৎসা দেয়াও সম্ভব হয় না। বাস্তবিক
অর্থে এখনও পর্যন্ত ক্যান্সারের চিকিৎসায়
পুরোপুরি কার্যকর কোনও ওষুধ আবিষ্কৃত হয় নি।
ক্যান্সার প্রতিকারের জন্য বিভিন্ন ধরেনর
চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।
তবে প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরলে এই রোগ
প্রতিকারের সম্ভাবনা বেড়ে যায়
অনেকখানি। বিশ্বে এখন পর্যন্ত ২০০
প্রকারেরও বেশি ক্যান্সারের
নমুনা পাওয়া গিয়েছে। প্রত্যেক
ক্যান্সারেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য
রয়েছে এবং এদের চিকিৎসা পদ্ধতিও
আলাদা। তবে কি ক্যান্সার অপ্রতিরোধ্য?
গবেষকেরা যদিও ক্যান্সারের যথাযথ
প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার করতে পারেন নি,
তবে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন
কীভাবে এই মরনব্যাধি এড়ানো যায়।
গবেষকদের মতে, ক্যান্সার প্রতিরোধ ৩০
থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে সম্ভব যদি নিয়ম
মেনে সঠিকভাবে জীবনযাপন করা যায়।
১. ধূমপান বর্জন করুন
ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হলে অ্যাকটিভ
এবং প্যাসিভ—দু’ভাবেই বিরত থাকতে হবে।
অ্যাকটিভ ধূমপান বলতে নিজে ধূমপান করা,
আর প্যাসিভ ধূমপান বলতে অন্য ধূমপায়ীদের
সঙ্গে থাকার কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবছর তামাকজাতীয় দ্রব্য ব্যবহারের জন্য
৫ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়।
অন্যভাবে বলতে গেলে, প্রতি ৬
সেকেন্ডে মৃত্যু ঘটছে একজন মানুষের তামাক
ব্যবহারের কারণে। পৃথিবীতে যত ধরনের
ক্যান্সার হয়, তার এক-চতুর্থাংশের কারণই
হচ্ছে ধূমপানসহ তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন।
২। অ্যালকোহল পরিহার করুন
ধূমপান যেমন শরীরে নানা ধরনের
ক্যান্সারের সৃষ্টি করে, ঠিক তেমনভাবেই
অ্যালকোহল শরীরের
নানা স্থানে ক্যান্সারের সৃষ্টি করে থাকে।
অ্যালকোহলের প্রভাবে
মুখ, লিভার, ইসোফেগাস, ব্রেস্ট,
ফ্যারিংসসহ বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সার
হয়ে থাকে।
৩। অতি বেগুনি (আল্ট্রা ভায়োলেট)
রশ্মি থেকে দূরে থাকুন
আল্ট্রা ভায়োলেট রে সূর্যের
আলোতে বিদ্যমান, এই রশ্মির
কারণে তা ত্বকের কোষের
নিউক্লিয়াসে পরিবর্তন
ঘটিয়ে ত্বকে ক্যান্সার তথা স্কিন ক্যান্সার
করে থাকে। অবশ্য এই ক্যান্সার আমাদের
তুলনায় ককেশিয়ান তথা সাদা চামড়ার
লোকদের ভেতর বেশি দেখা যায়। তার পরও
সূর্যের আলোর
প্রখরতা বেশি হলে সরাসরি সেই
আলোতে না থাকাটাই উত্তম।
৪। পরিমিত এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
আমাদের খাদ্যতালিকার ভেতর অনেক
খাবারই অ্যান্টি ক্যান্সারাস উপাদান বহন
করে (যেমন টমেটো), তাই পরিমিত এবং সুষম
খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ক্যান্সার প্রতিরোধ
সম্ভব।
৫। নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে ক্যান্সার
প্রতিরোধ সম্ভব।
ব্যাপারটা শুনতে কিছুটা অদ্ভুতও বটে—
ব্যায়াম কিনা করবে ক্যান্সার প্রতিরোধ!
নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে আমাদের
ইমিউনিটির কোষ সতেজ থাকে আর এই
কোষগুলোই আমাদের
শরীরে কোনো ক্যান্সার কোষ
সৃষ্টি হলে তা ধ্বংস করে থাকে!
৬। মধ্য বয়সের পর থেকে নিয়মিত চিকিত্সকের
শরণাপন্ন হউন
অনেক সময় ক্যান্সার হলে তা যদি দ্রুত
ডায়াগনোসিস করা যায়,
তাহলে চিকিত্সা করে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ
হয়ে ওঠা সম্ভব। তাই মধ্য বয়সের পর
থেকে নিয়মিত চিকিত্সকের
ফলো আপে থাকা উচিত।
তথ্যসুত্রঃ ওয়েবসাইট

Comments