আধুনিক যুগে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির
কল্যানে আমাদের
জীবনযাত্রা হয়ে গেছে অনেক আরামপ্রদ।
কোনো কাজেই আমাদের এখন নেই
কোনো কায়িক পরিশ্রম। তারপরেও
প্রতিনিয়ত মানুষ আতংকে ভুগে থাকেন।
আতংকে ভোগেন নানা রকম
অন্তর্ঘাতী রোগে আক্রান্ত হবার ভয়ে।
কেননা আজকাল এমন সব জীবনঘাতী রোগের
উদ্ভব হয়েছে,যার অধিকাংশরই
কোনো প্রতিকার নেই,নেই
কোনো স্থায়ী সমাধান। তার মধ্যে অন্যতম
হল ডায়াবেটিক। ডায়াবেটিকের
স্থায়ী কোনো চিকিতসা নেই। তাই এই
রোগীদেরকে মৃত্যুর আগপর্যন্ত
রোগটিকে বয়ে যেতে হয়। কিন্তু
সবচাইতে ভয়াবহ বিষয় হল,এটি কোনো একক
রোগ নয়,বরং অনেক রোগের জননী।
রোগে আক্রান্ত হবার পর দেহের অন্যান্য
অংগও ধীরে ধীরে আক্রান্ত
হতে থাকে,দেখা যায় নানা ধরনের
ইনফেকশন। যার অধিকাংশই ডায়াবেটিকের
সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয়। তাই এ
উপসর্গগুলো নিয়ে রোগীরা সন্দিহান
হয়ে থাকেন। চলুন জেনে নেয়া যাক
ডায়াবেটিক পরবর্তী নানা জটিলতা ও তার
সমাধানগুলো।
১.অনেক রোগীদের মাঝে দাঁতের মাড়ি নরম
হয়ে যাওয়া,এমনকি দাঁত
পড়ে যেতে দেখা যায়।
ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হবার পর
ধীরে ধীরে কেবিটিসের পরিমান
বাড়তে থাকে,দাঁতের মাড়ির নিচের
আঠালো নির্যাস কমে যেতে থাকে।
ফলে দাঁত পড়ে যেতে থাকে। ডায়াবেটিকই
এর মূল কারন। এর সাথে বয়সের
কোনো যোগসাজস নেই।
তাই রোগীদেরকে দাঁতের বাড়তি যত্ন
নিতে হবে। নিয়মিত দাঁত
ব্রাশ,ফ্লস,মাউথোয়াশ ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়াও ডায়াবেটিকের রোগীদের
ক্ষেত্রে দাঁতের যথাযথ যত্ন
নিতে হলে রক্তে চিনির পরিমান ঠিক
রাখতে হবে।
২.এছাড়াও আক্রান্ত রোগীর স্মৃতিশক্তি ও
মস্তিষ্কের স্বাভাবিক তীক্ষ্ণতা হ্রাস
পেতে থাকে। ডায়াবেটিক মস্তিষ্কের রক্ত
প্রবাহের শিরাগুলোকে নষ্ট করে দেয়।
ফলে পর্যাপ্ত রক্ত প্রবাহ সম্ভব হয় না।
ফলে মস্তিষ্ক ধীরে ধীরে দূর্বল হয়ে পড়ে।
ফলে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকে।।
৩.ডায়াবেটিকের প্রভাব
সবচাইতে বেশী পড়ে চোখের উপর।
রক্তে গ্লুকোজের দ্রুত ওঠানামার
ফলে চোখের লেন্স স্ফীত হয়ে ওঠে।
ফলে আমাদের
দৃষ্টিসীমা ক্রমান্বয়ে ঝাপসা হয়ে ওঠে,অর্থা
আমরা কম দেখতে পাই। জাতীয় চক্ষু
হাসপাতালের
চিকিতসকরা বলেন,ডায়াবেটিকে আক্রান্ত
রোগীদের বছরে অন্তত একবার চোখ
পরীক্ষা করা উচিত।
এতে যথাসময়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা যাবে।
৪.ডায়াবেটিকের অনেক রোগীরাই
বলেন,তারা কানে নানা ধরনের শব্দ
শুনতে পান। অনেক সময় এই সমস্যা রোগীদের
জীবন ভয়াবহ করে তোলে। এই শো শো শব্দ
অল্প থেকে এক সময় জোরে হতে থাকে,যদিও
এটা শুধুমাত্র রোগীই শুনে থাকেন।
রক্তে চিনি ও গ্লুকোজের পরিমান
নিয়ন্ত্রনে রাখাই এর প্রধান সমাধান।
৫.ডায়াবেটিকের রোগীদের কাটা ছেঁড়া খুব
সহজে শুকাতে চায় না। বরং ইনফেকশন
হয়ে কখনো কখনো অংগ কেটে ফেলতে হয়।
ইউরিনারি ইনফেকশনের ফলে এমনটা ঘটে।
এতে ব্যাক্টেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
চিকিতসকেরা নানা রকম এন্টিবায়োটিক
গ্রহনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
৬.এর ফলে মানুষের যউন জীবনও বিপর্যস্ত
হতে পারে। আমেরিকান ডায়াবেটিক
ইন্সটিটিউটের মতে,টাইপ টুতে আছেন এমন
রোগীদের মাঝে ৫০% পুরুষ ও প্রায় ৩৫%
মহিলারা এই সমস্যায় ভুগে থাকেন।
এক্ষেত্রে,জইবিক চাহিদার
অভাব,বিতৃষ্ণা,ঘনিষ্ঠতায়
অস্বস্তি ইত্যাদি দেখা দেয়।
৭.অনেক রোগী যাদের
পূর্বে হজমে কোনো সমস্যা হয়নি,তাদেরও
হজমশক্তি ব্যাহত হয় ডায়াবেটিকে আক্রান্ত
হবার পর। এছাড়াও ডায়রিয়া,গ্যাসট্রিক সহ
অন্য
ান্য ব্যাধী দেখা দেয়।
এক্ষেত্রে ক্ষুধামন্দা,বমিবমিভাব,খাবার পর
অতিরিক্ত ভারীবোধ হওয়া,বুক
জ্বালাপোড়া করা,ইত্যাদি লক্ষন
দেখা দিতে পারে।
তাই,চিকিতসকরা রোগীদের অতিরিক্ত
চর্বিযুক্ত এবং আঁশযুক্ত খাবার খেতে নিষেধ
করেন। তাদের জন্যে অতিরিক্ত
খাওয়া নিষেধ যা হজমে ব্যাঘাত করে।
ডায়াবেটিক এমনই ভয়াবহ রোগ
যে,রোগাক্রান্ত মায়ের গর্ভের সন্তানও
ডায়াবেটিকে আক্রান্ত হয়। অনেকে জানেনও
না তারা ডায়াবেটিকে আক্রান্ত। কিন্তু
এদিকে অন্তর্ঘাতী এই রোগ রোগীর
দেহে ক্রমান্বয়ে বিস্তার ঘটাতে থাকে। তাই
রোগের উপসর্গ সম্পর্কে সচেতন হওয়া অত্যন্ত
জরুরি। আর এই রোগের একমাত্র সমাধান
হল,খাওয়া,ও জীবনযাপন পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রন।
(সুত্র:রিডারস ডাইজেস্ট)
Comments
Post a Comment