পোশাকেই স্লিম হওয়ার গোপন রহস্য

আপনি যে খুব বেশি মোটা তা নয়। আবার
বেশি চিকনও না। তবে ইচ্ছা হয়, এখন যেমন
আছেন তার চেয়ে যদি আরেকটু স্লিম
হতে পারতেন, তবে আরো বেশি সুন্দর দেখাত
আপনাকে। ইচ্ছাপূরণে কত কী-ই না করছেন!
অথচ কাজ হচ্ছে না। সেসবের দিকে আর
না তাকিয়ে বরং নজর একটু
অন্যদিকে ফেরান।
কেমন? জটিল কিংবা ঝুট-ঝামেলার কিছু না।
শুধু এখন থেকে পোশাক পরিধানে একটু
কৌশলী হতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঠিক
পোশাকটি বাছাই করে আয়নার
সামনে গিয়ে নিজেই অবাক হবেন।
এতটা ওজন আর ভারী শরীরটা কোথায়
গায়েব! আগের চেয়ে স্লিম
লাগছে আপনাকে। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না!
মেনেই দেখুন না। সবার জন্য প্রযোজ্য।
মেয়েদের ক্ষেত্রে:
* লং স্কার্টের সঙ্গে ফিটেড টপস ব্যবহার
করুন।
* আপনার কোমরের দিকটা মোটা হলে এর
ওপরের অংশের জন্য গাঢ় উজ্জ্বল রং ব্যবহার
করুন। আর নিচের অংশে ব্যবহার করুন
হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রং।
* বেশি মোটা হলে ভি শেপ
অথবা চারকোণা গলা ব্যবহার করুন। জামার
গলায় লেসের ব্যবহার করুন। এতে গলার
অংশটি কোমরের চেয়ে বেশি মনোযোগ
পাবে।
* যাঁদের চেস্টের দিকটা বেশি মোটা,
তাঁরা ওপরের অংশের জন্য গাঢ়
রং কিংবা বড় প্রিন্টের কাপড় ব্যবহার
করতে পারেন।
* মোটা মেয়েরা শরীরের ওপরের অংশের
জন্য গাঢ় রঙের ওড়না কিংবা স্কার্ফ ব্যবহার
করতে পারেন। জামার দুই পাশে লেসের
ব্যবহার করুন। এতে সরু দেখাবে।
* কামিজে হাতের কাজ, ব্লক, প্রিন্ট,
এমব্রয়ডারির কাজ থাকলে তা যেন
লম্বালম্বি হয়।
* খুব ঢিলেঢালা বা বড় পাওয়ালা সালোয়ার
এড়িয়ে চলুন। আবার খুব চাপা ধরনের
সালোয়ারও পরবেন না। বরং মাঝারি রকমের
চাপা সালোয়ার পরতে পারেন।
* হাত বেশি মোটা হলে বেশি ছোট
হাতাওয়ালা কামিজ না পরাই ভালো। একটু
বড় করে হাত বানান। থ্রি কোয়ার্টার হাতের
জামা পরাই সবচেয়ে নিরাপদ।
* কামিজের পেছনের গলা খুব বেশি বড়
করবেন না। তাই বলে একদম ছোট গলা পরবেন
না, এতে আরো মোটা দেখাবে।
* কোণাকুণি স্ট্রাইপের ফিটিং শার্টও
ভালো লাগবে। স্কার্ফ ব্যবহার
করলে ভি বা ওয়াই শেপে বাঁধুন।
* যেকোনো রঙের সবচেয়ে গাঢ়
শেডটা বেছে নিন পোশাক নির্বাচনের
ক্ষেত্রে। কালো, নেভি ব্লু, বোটল গ্রিন,
কালচে মেরুন ইত্যাদি রঙে শরীর
কিছুটা স্লিম দেখায়।
* শার্টিন বা ভেলভেট কাপড়ের পোশাক
পরবেন না।
* শাড়ি পরিধানের সময় ভারী ও
জমকালো শাড়ির বদলে সফট ফ্যাব্রিকের
শাড়ি বেছে নিন।
* মোটা বলে অনেকেই
শাড়ি পরতে অস্বস্তি বোধ করেন। ভাবেন
শাড়ি পরলে বোধ হয় আরো মোটা লাগবে! এ
ক্ষেত্রে হালকা ধরনের কাপড়ের শাড়ি পরুন।
যেমন সফট সিল্ক, ক্রেপ সিল্ক বা জর্জেট।
অফিস বা অন্য কাজের জায়গায়
অনায়াসে পরতে পারেন এসব শাড়ি। উৎসব
বা পার্টিতে ভারী শাড়ি পরতে চাইলে তসর
সিল্ক বা সিল্ক বেনারসি পরতে পারেন।
* ভারী শাড়ি পরলে পেটের
কাছে বেশি কুঁচি দেবেন না।
বরং আঁচলটা লম্বা রাখুন। শাড়ি গাঢ় রঙের
পরুন। একরঙা বা গাঢ় কনস্ট্রাস্টের
শাড়ি পরলে বেশি ভালো লাগবে। প্রিন্টের
শাড়ি পরবেন না।
* সারা শরীর ঠিকঠাক অথচ হাতের গড়ন
মোটা। এমনটা হলে পোশাক বাছাই বেশ
ঝক্কির ব্যাপারই বটে! বিশেষ করে ছোট
হাতার পোশাক পরতেই চান না অনেকেই।
আসলে ছোট হাতার পোশাক যতটা সম্ভব
এড়িয়ে চলাই ভালো। তবে যদি একান্তই
পরতে চান,
তবে ম্যাগি হাতা পরে দেখতে পারেন।
পরতে পারেন কাপতান বা ওই কাটিংয়ের
পোশাক। এতে হাত ঢেকে থাকে অনেকটা।
ছোট হাতাও পরা হলো আবার বাহুমূলও
দেখা গেল না!
* নিশ্চিন্তে পরুন থ্রিকোয়ার্টার হাতার
পোশাক, হতে পারে সেটা কামিজ,
ফতুয়া বা টপস। নিজেকে আরেকটু
‘স্টাইলিশ’রূপে দেখতে চাইলে পরুন বেল
বা ডিভাইডার হাতার পোশাক। ডিভাইডার
হাতার সৌন্দর্য বাড়াতে এতে যোগ
করতে পারেন ফিতা।
* মোটা হাতের
মেয়েরা শাড়ি পরলে স্ট্রেইট হাতের ব্লাউজ
পরুন। ছোট হাতার ব্লাউজ
একরঙা না পরে ছোট ছোট প্রিন্টের
বা চেকের ব্লাউজ পরুন। এতে হাত কম
মোটা দেখাবে।
* কারুকাজ করা ভারী শাড়ি পরলে ব্লাউজ
পরুন সাধারণ। ভারী কাজের ব্লাউজ
পরলে ওজন বেশি দেখায়। স্ট্রেইট কাটের
থ্রিকোয়ার্টার ব্লাউজ পরতে পারেন।
ফুলহাতা পরতে চাইলে নেটের হাতা পরুন।
চুড়িদার ব্লাউজ পরলেও ওজন কম লাগবে,
হাতও চিকন দেখাবে।
আরো খেয়াল করুন:
* মেকআপের ক্ষেত্রে মুখ
কিছুটা চাপা দেখানোর জন্য ত্বকের
চেয়ে এক শেড গাঢ় প্যান কেক দিয়ে গালের
দুই পাশ চাপিয়ে নিন। এর পর ত্বকের রঙের
ফেস পাউডার দিয়ে ওপরে ব্লাশন
লাগিয়ে নিন। তাহলে মুখের দুই পাশ ও ডাবল
চিন কিছুটা কম বোঝা যাবে।
* যাঁদের মুখে মেদ বেশি তাঁরা চুল
ফুলিয়ে বাঁধবেন না। চুল স্ট্রেইট
করে ছেড়ে রাখুন
অথবা হালকা করে বেঁধে রাখুন।
* যাঁরা সানগ্লাস বা চশমা পরেন তাঁরা বড়
আকৃতির ফ্রেম নির্বাচন করুন। বেশি ছোট
ফ্রেম নির্বাচন করলে মুখের আকৃতি আরো বড়
দেখাবে।
* নেকলেস পরার ক্ষেত্রে গলার
সঙ্গে এঁটে থাকা নেকলেস পরবেন না। একটু
ঝোলানো ধরনের মালা বেছে নিন।
* যাঁদের শরীর মেদবহুল তাঁরা খুব বেশি চিকন
হিল পরবেন না। খুব বেশি চিকন হিল
বেমানান দেখাবে।
* কম হিলের বদলে চটি জুতা পরুন। হিল
পরতে চাইলে সরু হিল ভালো হবে।
মোটা হিল কিংবা বুট জুতা পরবেন না।
* স্যান্ডেলের ক্ষেত্রে লম্বা ও সরু স্যান্ডেল
ব্যবহার করুন।
* চুল ছোট করে রাখুন।
ছেলেদের ক্ষেত্রে:
* ফিটেড শার্ট পরিধান করুন।
* জিন্সের ক্ষেত্রে ডার্ক কালার ব্যবহার
করুন।
* স্ট্রেইট বেল্ট পরলে স্লিম দেখাবে।
* শার্ট বা টি-শার্ট যেটাই পরুন না কেন,
তা যেন গাঢ় রঙের হয় এবং অবশ্যই যেন
আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মানানসই হয়।
চেকের ক্ষেত্রে ছোট চেকের শার্ট পরুন।
* প্যান্টের ফিটিংয়ের ব্যাপারে খেয়াল
রাখুন। ঢোলা প্যান্টে থাই কিন্তু
আরো মোটা দেখাবে! প্রয়োজনে দর্জির
কাছ থেকে ঠিক করে নিন।
* খুব মোটা বা চওড়া কলারের পোশাক পরবেন
না। এতে ঘাড় ছোট দেখায়,
ফলে আরো মোটা দেখাবে। শার্টের
সবচেয়ে ওপরের বোতাম কখনোই লাগাবেন
না। এতেও ঘাড় ছোট দেখায়।
* যদি ভুঁড়ি থাকে, তাহলে শার্ট একটু
ঢিলাভাবে ইন করুন। বিশেষ করে পেটের
জায়গাটায় এমনভাবে শার্ট ইন করুন,
যাতে বাড়তি পেট কম বোঝা যায়।
* চওড়া বেল্ট ব্যবহার
না করে মাঝারি আকারের বেল্ট ব্যবহার
করুন। বেল্টে যেন ভারী কাজ না থাকে।
* খুব বেশি চওড়া ও রংচঙে টাই পরবেন না।
এতে নজর পেটের দিকে পড়ে যায়
এবং বেশি মোটা দেখায়।
* হাফহাতা শার্ট পরতে চাইলে খুব
বেশি ফিটিং শার্ট না পরাই ভালো। এ
ক্ষেত্রে হাওয়াই শার্ট পরতে পারেন।
* ফর্মাল প্যান্টের ক্ষেত্রেও গাঢ়
রং বেছে নিন।
* ছেলেরা জিন্স পরুন স্ট্রেইট কাটের,
ন্যারো কাট একদম পরবেন না। এতে হিপ ও
থাই আরো চওড়া দেখাবে। এ ছাড়া গোল
গলার গেঞ্জি না পরে শার্ট কলার পরুন। গোল
গলায় ওজন বেশি মনে তো হবেই,
সঙ্গে ভুঁড়িটাও বেশ ফুটে উঠবে।

Comments