মামুনুলদের চোখে এখন অনেক বড় স্বপ্ন উঁকি দিচ্ছে-মালয়েশিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো গোল্ড কাপের শিরোপা জিততেই হবে।
ট্রফির
সঙ্গে ৭০ লাখ টাকা পুরস্কার পাওয়ার সুযোগও থাকছে মামুনুল-এমিলিদের সামনে।
সেমি-ফাইনাল জিতে ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকার
অর্থ পুরস্কার পাওয়া এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছে মামুনুলের দল। সভাপতি ঘোষণা
দিয়েছেন, শিরোপা জিতলে দলকে আরো ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। এছাড়া শেখ
জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের দিয়েছেন ২০ লাখ টাকা পুরস্কার
দেয়ার ঘোষণা।
প্রথমবারের মতো গোল্ড কাপ জয়ের হাতছানি আছে মালয়েশিয়ার
সামনেও। রোববার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বিকাল পাঁচটায় বাংলাদেশের মতো
ট্রফি জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নামবে অতিথিরা। ভেন্যু, দর্শক-কোনোটাই পক্ষে নেই;
কিন্তু স্বাগতিকদের হারানোর প্রশ্নে দারুণ প্রত্যয়ী তারা।
গোল্ড
কাপের এ আসরে ফাইনালের আগ পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল মালয়েশিয়া। গ্রুপ পর্ব ও
সেমি-ফাইনাল মিলিয়ে তিন ম্যাচ জিতেছে তারা। অন্যদিকে তিন ম্যাচে বাংলাদেশের
জয় দুটি, হার একটি। তবে ফাইনালে এ অতীত পরিসংখ্যান খুব একটা কাজে আসবে না
বলে মনে করছেন অতিথি দলের কোচ রাজীব ইসমাইল। ‘ভিন্ন স্বাদের’ ম্যাচ হবে বলে
শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অধিনায়ক মামুনুল
ইসলাম প্রথম ম্যাচের হারের প্রতিশোধ নেয়ার কথা না বললেও গত তিন ম্যাচে মাঝ
মাঠে আলো ছড়ানো মিডফিল্ডার হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাস বলেন, “প্রথম ম্যাচে
ওদের কাছে হেরেছিলাম। আমার এখন একটাই কথা, মালয়েশিয়াকে হারিয়ে প্রতিশোধ
নিয়ে শিরোপাটা আমরা রেখে দিতে চাই।”
আর প্রতিশোধ নিয়ে স্মরণীয়
ফাইনালের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সেমি-ফাইনালে থাইল্যান্ডের জালে গোল করা
ডিফেন্ডার নাসিরউদ্দিন চৌধূরী, “এবার আর ওদের (মালয়েশিয়া) কাছে হারতে চাই
না। ব্যক্তিগতভাবে আমি চাই-আমার গোলেই দল জিতুক। যদিও আগে ওদের কাছে হেরেছি
কিন্তু ফাইনালে আমরা এগিয়ে আছি। ওদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হবো। একটা স্মরণীয়
ফাইনাল হবে।”
চাওয়া পূরণের জন্য জরুরি গোলটা অবশ্য ফরোয়ার্ডরা এখনো
এনে দিতে পারেননি। গত তিন ম্যাচে বাংলাদেশের হয়ে দুই গোল করেছেন হেমন্ত ও
নাসিরউদ্দিন। এদের প্রথম জন মিডফিল্ডার, পরের জন ডিফেন্ডার। জাহিদ-এমিলির
স্ট্রাইকিং জুটি এখনো প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি। তবে ফাইনালে গোল খরা
কাঁটাতে চান দুজনই।
শেখ রাসেলের ফরোয়ার্ড জাহিদ হোসেন বলেন, “এটা
ফাইনাল। এটা যেভাবেই হোক জিততে হবে। শতভাগ দিয়ে খেলব এবং গোল করব। আমরা
দেশের মাটিতে খেলছি।”
জাতীয় দলের মূল ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি
শিরোপা জয়ের এ সুযোগ যে কোনো মূল্যে কাজে লাগাতে চান। নিজে গোল পান বা না
পান, দল শিরোপা জিতলে লক্ষ্য পূরণ হবে বলে জানান তিনি।
“এই রকম
টুর্নামেন্টের ফাইনালে আবার কবে বাংলাদেশ খেলবে, সেটা আমরা নিজেরাও জানি
না। ক্যারিয়ার শেষে কিন্তু এসব অর্জনই আমাদের সঙ্গী হবে। এখন কিছু না করতে
পারলে এমন সুযোগ আর কখনো হয়ত আসবে না। যেহেতু এতবড় সুযোগ এসেছে, আমরা এই
সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না।”
“যে ফর্মেশনে আমরা খেলছি, তাতে গোল করা
কঠিন। অনেক অ্যাটাকিং খেলছি না। আমি গোল পাওয়া না পাওয়া নিয়ে চিন্তা করছি
না। আমার কাছে দলের জয়টা পাওয়া জরুরি”, যোগ করেন এমিলি।
এএফসির
র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের (৩৪তম) চেয়ে এগিয়ে মালয়েশিয়া (২৮তম)। গত তিন ম্যাচে
প্রতিপক্ষের জালে চার গোল করেছে অতিথি দলের ফুটবলারা। বাংলাদেশ কোচ লোডভিক
ডি ক্রুইফও প্রতিপক্ষের ছোট ছোট পাসে খেলা ফুটবলকে সমীহ করছেন। তবে তার
শিষ্য ডিফেন্ডার ইয়াসিন খান প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ডদের
রক্ষণদেয়ালে আটকে রাখার।
মালয়েশিয়া কোচ রাজীব ইসমাইল অবশ্য
বাংলাদেশকে ফেভারিট মেনে জয়ের ছক কষছেন, “অতীতে আমি দুইবার খেলোয়াড় হিসেবে
এখানে (বাংলাদেশে) এসেছি। এবার কোচ হিসেবে এখানে এলাম। কাপ নিয়ে ফিরতে
চাই।”
Comments
Post a Comment