একসময় সাইকেল ছিল গ্রাম বাংলার একমাত্র অভিজাত এবং সৌখিন
বাহন। গ্রামীণ জনজীবনে তিক্ততাপূর্ণ অসহায় জীবনযাত্রায়
যেখানে গাড়ী ঘোড়া পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারত না,
সেখানে দু’চাকাওয়ালাদের বিরামহীন ক্রিং ক্রিং পথচলা আনন্দময়
ও গতিময় করছে বেশ কয়েকটি যুগ। তবে সময়ের স্রোতে সেই স্বর্ণময়
সাইকেল যুগের চাকা একটা সময় এসে থেমে যায় প্রযুক্তির গতির
কাছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয় অনন্য গতিসম্পন্ন ও যান্ত্রিক ব্যঞ্জনায়
সমৃদ্ধ আধুনিক মোটর বাইক। সাথে নিয়ে এসেছে বিভিন্ন যান্ত্রিক
যান। যা সাইকেলকে যাদুঘরে রাখার জন্যই যথেষ্ট। এসবের উত্থান
বেশ জোরেশোরেই হলেও পরিবেশের ভারসাম্য
শ্মশানে নিয়ে যাওয়াতে এদের অবদানও কম নয়।
তবে পরিবেশ রক্ষায় নাগরিক জীবনে সেই সাইকেল ফিরে এসেছে,
আবার ক্রিং ক্রিং শব্দে মুখরিত হতে থাকে। পরিবেশ সচেতনতায়
উদ্যোমী যুবকদের উদ্বুদ্ধ করে এই সাইকেল। সেই সাইকেল চড়েই আজ বর
গেলেন বিয়ে করতে।
শুক্রবার সিলেটে প্রথমবারের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সিলেট
মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের সিনিয়র
প্রভাষক ও সিলেট সাইক্লিস্ট কমিউনিটির অন্যতম সঞ্চালক আনোয়ার
হোসেন এর বিয়েতে এই দৃশ্য দেখেছেন সিলেটবাসী। অভিনব ও
আকর্ষণীয় বরযাত্রায় বরের সাইকেলসহ ৬০-৭০টি অংশগ্রহণ করে।
নগরীর রাজারগলিস্থ বরের নিজবাড়ী থেকে সোবহানীঘাটের
আগ্রা কমিউনিটি সেন্টার পর্যন্ত এই সাইকেলযাত্রার বিরল
দৃশ্যটি নগরবাসীর মনে দাগ কাটে। রাস্তার দুপাশের জনজীবন
কিছুক্ষণের জন্য থমকে দিয়েছিল সাইকেলময় এই বরযাত্রা।মুলত পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি সবার হৃদয়ে পৌছে দেয়ার জন্যই শখের বশেই এ আয়োজন।
সিলেট সাইক্লিস্ট কমিউনিটির সঞ্চালক কাজী অহিদ জানান, ‘রাইড
ফর গ্রিন- রাইড ফর লাইফ’ এই স্লোগান নিয়ে আমরা সাইক্লিং করি।
সবাইকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও সচেতনতায় উদ্বুদ্ধ করতেই ২০১৩
এর অক্টোবরে সংগঠনের যাত্রা শুরু করি। মূলত জোর প্রচারণার অংশ
হিসেবে সংগঠনের অন্যতম সঞ্চালক আনোয়ার হোসেনের বিয়েতে এই
অভিনব বরযাত্রা। আমরা বিশ্বাস করি এরকম বরযাত্রা সিলেটে আরও
হবে।
Comments
Post a Comment