আপনি সাইকো? জেনে নিন !

সাইকোপ্যাথি হল এক ধরনের মানষিক
অসুস্ততা যা কিনা অনেক মানুষের
মধ্যে বিরাজমান ।
এটি একটি পার্সোনালিটি ডিজঅর্ডার
যা বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
সনাক্তকরনেই বুঝা যায় ।
অগভীর আবেগ, কম ভয়, উদাসীন সহানুভূতি,
ঠাণ্ডা মাথায় অন্যায় করা, নিজ দোষ
শিকার না করা, নিজেকে অনেক কিছু
মনে করা, মানুষকে মিথ্যা দিয়ে প্রভাবিত
করা, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা,
পরিকল্পনা করে খারাপ কাজ করা,
ধান্দাবাজি, মানুষের ক্ষতি করে অনুতপ্ত
না হওয়া, মানুষের কষ্ট দেখে উপহাস
করা এবং অসামাজিক আচরণ যেমন খারাপ
চরিত্রের দিকে ধাবিত হওয়া, স্বার্থ
হাসিলের জন্য নিজের চরিত্র নষ্ট করা, পরের
সাফল্যের বা শ্রমের উপর নিজ
জীবনধারা বিন্যাস
করা এবং ঠাণ্ডা মস্তিষ্কে অপরাধিত্ব বজায়
রাখা ইত্যাদি । মানুষের মধ্যে এসব আচরন
বিদ্যমান থাকলে বুঝবেন সেই
মানুষটি একটি সাইকোপ্যাথ ।
সাইকোপ্যাথ নারী ও পুরুষ উভয়ের
মধ্যে বিরাজমান । কারো মধ্যে উপরের
একটি আচরন বিরাজমান আছে বলেই
ধরে নেয়া যাবে না যে উনিই সাইকোপ্যাথ ।
তবে কিছু আচরন আছে যা একাই
সাইকোপ্যাথি পয়েন্ট টেবিলে অনেক উচু
পর্যায়ে । এসব আচরনের মধ্যে মানুষের
ক্ষতি করে অনুতপ্ত না হওয়া, মানুষের কষ্ট
দেখে উপহাস করা, পরিকল্পনা করে খারাপ
কাজ করা,
ধান্দাবাজি ইত্যাদি সাইকোপ্যাথ আচরনের
প্রারম্ভিক লক্ষণ সমূহ এবং এসব আচরন
দেখে আপনি অন্যান্য
আচরনগুলো মিলাতে পারেন ।
এসব মানুষেরা তাদের ভুল ও অন্যায় ঢাকার
জন্য নানান রকম আপরাধমুলক কাজ
করে থাকে এবং সামাজিক সহানুভূতি নেবার
চেষ্টা করে । সাইকোপ্যাথরা প্যাথলজিকাল
মিথ্যুক বা অনর্গল
মিথ্যা কথা বলে নিজেদের সুখ আদায়
করে এবং এরা নিজের সুখ ছারা আর কিছুই
বুঝেনা । সামাজিকতার পরোয়াও
এরা করেনা । এরা নিজেদেরকে অনেক
ভালবাসে । এদের অনেকেই উচ্চ শিক্ষিত ও
সমাজের অনেক নামিধামি মানুষ । অন্যায়
করে ধরা খেলে এরা অভিনয়
করে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং অনুতপ্ত
হয়েছে দেখায় ।
সাইকোপ্যাথি মধ্যে বিরাজমান চারিত্রিক
বৈশিষ্ট্য সমুহ বিশ্লেষণ করে ডঃ রবার্ট ডি.
হেরি সাইকোপ্যাথ চেকলিষ্ট-রিভাইস
(পিসি এল – আর) তৈরি করেন ।
সাইকোপ্যাথের চারিত্রিক ২০টি লক্ষন
পিসিএল-আর এ বর্ণিত হয়েছে । হেয়ারের
মতে একজন অপরাধীর মধ্যে দ্রুত
সাইকোপ্যাথি নির্ণয় সূচক চারিত্রিক
লক্ষণগুলোকে উনি কয়েকটি উপধারায় ভাগ
করেছেন ।
উপধারা ১.
a. আত্মকেন্দ্রিক – যে স্বীয়
সত্তা ছাড়া আর
কারো কথা চিন্তা করে না । সবসময়
নিজেকে নিয়ে ব্যাস্ত থাকে ।
b. চাতুর্য্য – যে খুব বেশি চালাক
এবং সামাজিক সহানুভুতিকে যে নিজ
স্বার্থে ব্যাবহার করে ।
c. স্বীয় সুখি মৌলবাদি – যে কিনা নিজের
সুখের কথা ছাড়া আর কারো কথা ভাবে না ।
d. সুস্থ মাথায় হাসি মুখে মিথ্যা বলা –
এরা মিথ্যা বললে তা ধরার কোন উপায় নাই ।
অনড়গল মিথ্যা বলা এদের অভ্যাস ।
e. ধান্দাবাজ – এরা কার্জ হাসিলের জন্য
মিথ্যা বলতে থাকে ।
উপধারা ২.
a. আবেগ কম থাকা – এদের মানুষের জন্য
মায়া দয়া কম থাকে ।
b. নিজেকে সবসময় নির্দোষ মনে করা –
এরা কখনই নিজের দোষ শিকার করে না ।
c. সহানুভূতির অভাব – মানুষের কষ্ট ও
বিপদে এরা সহানুভূতি দেখায় না ।
উপধারা ৩.
a. উচ্চবিলাসিতা – ধান্দাবাজির
মাধ্যমে এরা উচ্চ বিলাসিতা বজায় রাখে ।
b. খারাপ কাজের উদ্দীপনা সংগ্রহের
অনুসন্ধানে থাকা – সুযোগ থাকলেও
এরা খারাপের দিকে আগায় ।
c. পরজীবী জীবনধারা – পরের উপর বেল
ভাঙ্গতে এরা খুবই পারদর্শী ।
d. বাস্তবসম্মত, দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্যের অভাব
– এরা অন্যায়ের আশ্রয়ধারী বিধায় এদের
বাস্তব মেয়াদি দীর্ঘ পরিকল্পনা থাকে না।
e. দায়িত্ববোধহীন – সামাজিক
দায়িত্ববোধের অভাব ।
উপধারা ৪.
a. অসামাজিকতায় লিপ্ত থাকা –
মিষ্টভাষী এরা নানান ধরনের সামাজিক
কূকর্মে লিপ্ত থাকে ।
b. নিজের অসদাচরণ অনিয়ন্ত্রিত রাখা –
এরা মানুষের বোধগম্যের নিচে অবস্থান
করে নিজেদের অসদাচরন করতে থাকে ।
c. প্রারম্ভিক আচরণগত সমস্যা – এদের
অনেকেই কৈশোর বা যৌবনের প্রারম্ভিক
সময় থেকে পাপে লিপ্ত থাকে ।
d. ফৌজদারী বহুমুখী অন্যায় কাজে লিপ্ত
থাকা - সাইকোপ্যাথ পুরুষদের সহজে ধরা যায়
কিন্তু সাইকোপ্যাথি নারীর
লক্ষণগুলো সামাজিক
রীতি দিয়ে ঢাকা থাকে । তাই সাইকোপ্যাথ
নারী সনাক্ত একটু বেশি কষ্টকর ।
e. এদের অনেকেরই স্বল্পমেয়াদী বৈবাহিক
সম্পর্ক থাকে – অধিকাংশ নারীর
মধ্যে এটি বেশি দেখা যায় ।
f. এলোমেলো যৌন আচরণে লিপ্ত থাকা –
অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে এ
উপাদান বিরাজমান থাকবেই ।
সাইকোপ্যাথি টেস্টঃ আপনাদের জন্য, “এক
নারী উনার মায়ের শেষকৃত্যে উপস্থিত
একটি যুবককে দেখে খুব পচ্ছন্দ করেন।
উনি স্বপ্ন করেন যুবকটিকে নিয়ে জীবন
গড়তে। এর ঠিক ২ সপ্তাহ পরে নারীটি উনার
ছোট বোনকে খুন করেন। ”
বলুনতো খুনটি নারীটি কেন করলো?

Comments